শুভেন্দুর হাত ধরে তৃণমূল দলটি কতটা করেছে সেটা ইতিহাস সাক্ষী আছে, কিন্তু দলটি ভাঙ্গা যে সবথেকে বড় হাত থাকবে সেটা বাস্তবেই আমরা পরক্ষ করতে পারছি।শুভেন্দুর পর নতুন সমস্যা নিয়ে হাজির আসানসোলের পৌর প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। জিতেন্দ্রর ক্ষোভ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে,পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এর সঙ্গে বৈঠক করতে মঙ্গলবার কলকাতা পর্যন্ত আসেননি আসানসোলের পৌর প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। সোমবার অবশ্য সে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন জিতেন্দ্র। স্পষ্ট জানিয়ে ছিলেন, তার ভরসা একমাত্র দল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর।কিন্তু বুধবার সকালে ফের বেসুরো গাইতে শুরু করেন জিতেন্দ্র। আসানসোলের ছেলে মেয়েদের চাকরি না পাওয়া, তাকে সভা করতে না দেওয়া এমন দলের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আনেন। পরিস্থিতি বুঝে এরপরই বিকালে উত্তরবঙ্গ থেকে সরাসরি জিতেন্দ্র তিওয়ারি কে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, সেদিন উত্তরবঙ্গ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনে জিতেন্দ্র তিওয়ারি কে বলেন, 'মাথা গরম করিস না। আমি যাচ্ছি ১৮ তারিখে, কথা বলবো সবকিছু নিয়ে।'খুব যেন কিছুটা হলেও প্রলেপ পড়ে জিতেন্দ্রর। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী ফোন করার পর জিতেন্দ্র আসানসোল পুরসভা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে চিফ ইঞ্জিনিয়ার কে বলেন, আগামীকাল বিকেল তিনটের সময় তিনি পুরসভায় সব বিভাগীয় প্রধান কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। চিফ ইঞ্জিনিয়ার এর মতে, উনি একটি গেট টুগেদার করতে চেয়েছিলে।যদিও এদিন সন্ধ্যাতেই আবার শুভেন্দ্র অনুগামী বলে পরিচিত তৃণমূল সাংসদ সুনিল মন্ডলের বাড়ি যান জিতেন্দ্র তিওয়ারি।
এদিন সকালেই জিতেন্দ্র বলেন, ' জেলা সভাপতি পদে আছি। যে মুহুর্তে ছাড়তে বলবে, সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেবো। আসানসোলের পৌর প্রশাসক পদে রেখেছে, সেটাও যখনি বলবে ছেড়ে দেবো। আমার পদের কোন মোহ নেই'। তবে বিকেলের পর যেন পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূলে ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও জিতেন্দ্র পর্বের বরফ গলাতে সোমবার রাতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অরূপ বিশ্বাস জিতেন্দ্র কে ফোন করেন বলে সূত্রের খবর। ঠিক হয়েছে,মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফর থেকে কলকাতায় ফিরলো ১৮ ডিসেম্বর সরাসরি কথা বলবে আসানসোলের ডেপুটি এই নেতা। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অবশ্য কটাক্ষ, 'এখন অনেকেই বেসুরো গাইবে। আমি এটুকু বলতে পারি ১৯ ডিসেম্বর পর তৃণমূলের ঘণ্টা বেজে যাবে।গত রবিবার রাতে রাজ্যের পুরো মন্ত্রীকে দেওয়া জিতেন্দ্র চিঠি সোমবার সকালে প্রকাশ্যে আসতেই গরম হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। তানিয়া সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় ফিরহাদের সঙ্গে বাকযুদ্ধ হয় জিতেন্দ্র।
পুরমন্ত্রী জিতেন্দ্র কে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৬টার সময় কলকাতার বৈঠকে ডেকেছেন। তবে জিতেন্দ্র যাবে কিনা সে বিষয়ে কোন কিছু নিশ্চিত জানা যায়নি।থেকেই এ নিয়ে যথেষ্ট চর্চায় ছিল আসানসোল রাজ্য রাজনীতি। কিন্তু বেলা বারোটা পর্যন্ত বোঝা যায়নি, জয়েন্দ্র আদর সন্ধ্যায় বৈঠকে যাবেন কিনা।মঙ্গলবার সকাল থেকেই তিনি ব্যস্ত ছিলেন আসানসোলের পুরো নিগমের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও বৈঠক নিয়ে। সকাল ১১ টা থেকে আসানসোল এর পুরো নিগমের রেলপার এলাকায় পর পর তিনটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। আর সেখান থেকে আসেন পুরো নিগমের। সেখানে বেলা তিনটে পর্যন্ত ছিলেন।তখন মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে যায় যে জিতেন্দ্র আর পুরো মন্ত্রী ( ফিরহাদ হাকিম) সঙ্গে বৈঠক করতে করতে যাচ্ছেন না । এর পরেও তিনি একাধিক কাজে ব্যস্ত ছিলেন সন্ধ্যা পর্যন্ত।
কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত জানান।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন